বিয়ের কথা ফাঁস করায় খুন!

নিহত সুজিত্রা রানী দাস ওরফে রিনা আক্তার
নিহত সুজিত্রা রানী দাস ওরফে রিনা আক্তার

বিয়ের কথা ফাঁস করে দেওয়ায় সুজিত্রা রানী দাস ওরফে রিনা আক্তারকে (৩৫) খুন করেন তাঁর স্বামী পিন্টু (৪১)। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে পিন্টু এসব কথা স্বীকার করেন।

নিহত রিনার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। রাজধানীর খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, সন্দেহভাজন খুনি পিন্টু রোববার ঢাকার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। স্ত্রীকে খুন করার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। এখন তিনি কারাগারে। পিন্টু রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।

ঢাকার খিলক্ষেতের বোডঘাট নামাপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রিনা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর ভাই জনি চন্দ্র দাস বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

জনি চন্দ্র প্রথম আলোকে জানান, ১৭ বছর আগে সুজিত্রা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হন। ১০ বছর আগে জসীম নামের একজনকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে ৯ বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।

খিলগাঁও থানার পুলিশ বলছে, রিনা আগের স্বামী জসীমকে তালাক দিয়ে বছরখানেক আগে পিন্টুকে বিয়ে করেন। পিন্টুর ছিল এটা তৃতীয় বিয়ে। আগের দুই স্ত্রী ঢাকায় থাকেন। তাঁদের ভরণপোষণ দেন পিন্টু।

সন্দেহভাজন খুনি পিন্টু ছবি: সংগৃহীত
সন্দেহভাজন খুনি পিন্টু ছবি: সংগৃহীত



ওসি শহিদুল হক বলেন, বিয়ের পর রিনাকে খিলক্ষেত এলাকায় বাসা ভাড়া করে দেন পিন্টু। মাঝেমধ্যে এখানে এসে থাকতেন তিনি। ভরণপোষণও দিতেন। তবে কয়েক মাস ধরে ভরণপোষণ না দিলে ক্ষুব্ধ হন রিনা। তিনি পিন্টুর আগের দুই স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। পিন্টুর সঙ্গে তাঁর বিয়ের কাবিননামাও দেখান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রিনাকে খুন করার পরিকল্পনা করেন পিন্টু।

রিনা আক্তার খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন আকলিমা আক্তার (২৮) ও খোদেজা বেগম (৩২)। আদালতকে পুলিশ এক প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, রিনাকে যখন খুন করা হয় তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন আকলিমা। আর খুনের পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন খোদেজা।

পুলিশ বলছে, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সেদিন রাত দুইটার পর রিনার খিলক্ষেতের বাসায় আসেন পিন্টু। এরপর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তাঁকে খুন করে চলে যান।

রিনার ভাই জনি চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, বোন সুজিত্রার সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না। কয়েক বছর পরপর দেখা হতো। সুজিত্রার বাসায় কোনো দিন তিনি আসেননি। পুলিশের কাছ থেকে মৃত্যুর খবর পেয়ে ঢাকায় এসে মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ রয়েছে, তিন মাস ধরে রিনার খোঁজখবরও নিতেন না। ভরণপোষণ দেওয়া বন্ধ করে দেন পিন্টু।