দুদকের অভিযান, সুপারভাইজার বরখাস্ত
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আজিমপুর আঞ্চলিক অফিসে অভিযান চালিয়ে দুর্নীতির ঘটনা হাতেনাতে ধরেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল। এ ঘটনায় একজন সুপারভাইজারকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ বুধবার দুদকের এনফোর্সমেন্ট দলের সদস্যরা ডিএসসিসির ওই কার্যালয়ে অভিযান চালায় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। সূত্র জানায়, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে একটি দল গঠন করা হয়। সহকারী পরিচালক সেলিনা আখতার মনি, মো. জাকারিয়াসহ পুলিশের সমন্বিত সাত সদস্যের একটি দল আকস্মিকভাবে আজিমপুরে ডিএসসিসির কর অঞ্চল-৩ এ অভিযান চালায়।
সূত্র জানায়, দলটি সেখানে গিয়ে দেখতে পায় অফিসটি দালাল নিয়ন্ত্রিত। দুদক দলের উপস্থিতি টের পেয়ে দালালেরা পালিয়ে যান। কিন্তু এক দালালের ফেলে যাওয়া একটি ব্যাগ দুদকের দলটি জব্দ করে। ওই ব্যাগ খুলে দেখা যায়, তাতে সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, ১৬টি ট্রেড লাইসেন্সের বই ও ব্যাংক চালান ফরম রয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, রতন কুমার বাবু নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুপারভাইজার (লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন) চন্দ্র শেখর রায় ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি বাবদ বেআইনিভাবে সাত হাজার টাকা নিয়েছেন। এ ঘটনা উদঘাটন করার পর দুদকের মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরী আজিমপুর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর আজিমপুর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম আনছারুজ্জামানের (উপসচিব) উপস্থিতিতে দুদক দলটি দুর্নীতির প্রামাণ্য দলিল উপস্থাপন করে।
ওই কর্মকর্তা দুদক দলকে আশ্বস্ত করেন, সিটি করপোরেশন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দুদক জানিয়েছে, সর্বশেষ পাওয়া তথ্যমতে, সুপারভাইজার চন্দ্রশেখরকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।
এ বিষয়ে জানতে আঞ্চলিক কর্মকর্তা এস এম আনছারুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে ডিএসসিসির উপপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সাইদুর রহমান খানকে ফোন করলে তিনি জানান, তাঁরা উন্নয়ন মেলায় রয়েছেন। তবে আঞ্চলিক কার্যালয়ে দুদকের অভিযান সম্পর্কে আঞ্চলিক কর্মকর্তার কাছ থেকে জেনেছেন। সুপারভাইজারের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাল বৃহস্পতিবার অফিসে গিয়ে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুদকের সুপারিশ থাকলে সে অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
এ অভিযান প্রসঙ্গে দুদক এনফোর্সমেন্ট অভিযানের সমন্বয়কারী মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের দুর্নীতির কারণে শুধু মানুষের হয়রানিই হচ্ছে না, রাজস্ব আদায়ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দুদক এসব ঘটনা প্রতিরোধে অভিযান অব্যাহত রাখবে এবং প্রয়োজনে সিটি করপোরেশনের সহায়তায় দুর্নীতিবাজদের তালিকা করে আইনি প্রক্রিয়ায় অনুসন্ধান কাজ শুরু করবে।’