মৃত ভাইয়ের নামে মামলা, পালিয়ে আছেন বড় ভাই
• ১২ বছর আগে বিষপানে মৃত্যু হয় কায়েমের
• মৃত কায়েমের নামেই মামলার এজাহার
• কায়েমের বড় ভাই কাশেম পালিয়ে বেড়াচ্ছেন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের ভাড়ুরা গ্রামের মৃত বাটুন শেখের ছেলে মো. কায়েম। প্রায় ১২ বছর আগে বিষপানে তাঁর মৃত্যু হয়। তখন বয়স ছিল ১৯ বছর। তবে সম্প্রতি পুলিশের এক মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এই কায়েমই গত ২১ সেপ্টেম্বর গ্রামের বিদ্যালয়ের পাশে মেহগনি–বাগানে বসে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি পালিয়ে গেছেন।
মৃত ব্যক্তির নামে এমন এজাহারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ সম্প্রতি কায়েমের বাড়িতে গিয়ে জানায়, কায়েমের নয়, তাঁর জায়গায় বড় ভাই কাশেমের নাম হবে। এরপর থেকে কৃষক কাশেম গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২১ সেপ্টেম্বর কুমারখালীর যদুবয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে জনৈক আফসার আলীর মেহগনি–বাগানের মধ্যে বসে বিএনপি–জামায়াতের নেতা–কর্মীরা নাশকতার পরিকল্পনার বৈঠক করছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে সাতজনকে আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১৫টি ককটেল–সদৃশ বস্তু উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি জানার পর পুলিশের পক্ষ থেকে তোড়জোড় শুরু হয়। কয়েক দিন আগে পুলিশের একটি দল কায়েমের বাড়িতে আসে। তাঁর মা ও ভাবিকে বলে, ভুল করে কায়েমের নাম চলে এসেছে। আসামি হবেন কায়েমের বড় ভাই কাশেম।
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কায়েমের পরিবার বিএনপির সমর্থক। তবে পরিবারের কেউ কমিটিতে নেই। সরাসরি কেউ রাজনীতি করেন না। মৃত কায়েমকে পুলিশ আসামি করেছে। এখন তাঁর ভাইকেও আসামি দেখিয়ে পুলিশ ধরার চেষ্টা করছে।
কাশেমের স্ত্রী রাশিদা খাতুন বলেন, তাঁদের পরিবারের কেউ রাজনীতি করেন না। কায়েম কলেজে পড়ার সময় মারা গেছেন। এলাকার লোকজন ষড়যন্ত্র করে এ কাজ করেছে। তাঁর স্বামী কাশেম কৃষিকাজ করেন। পুলিশের ভয়ে তিনিও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাস প্রথম আলোকে বলেন, মৃত কায়েমের নাম কীভাবে এল, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। হয়তো কম্পিউটার টাইপে ভুল হতে পারে। তাঁর ভাই কাশেমের পরিবর্তে ভুলে কায়েমের নাম চলে আসতে পারে। এটা ঠিক করা হবে।