ডিজিটাল আইন বাতিলের দাবিতে বুধবার গণসংহতির আন্দোলনের বিক্ষোভ

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর। ছবি: সংগৃহীত
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর। ছবি: সংগৃহীত

ডিজিটাল আইন বাতিলের দাবি করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। আজ রোববার গণসংহতি আন্দোলনের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন। একই সঙ্গে আইনটি বাতিলের দাবিতে আগামী বুধবার গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে বিক্ষোভ-সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তিনি।

গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতার সব সুযোগ এই আইন রুদ্ধ করবে। আগামী বুধবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ৬ অক্টোবর এই বিষয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে মণি সিংহ-ফরহাদ ট্রাস্টের মুনীর-আজাদ মিলনায়তনে। এসব কর্মসূচি সফল করতে গণমাধ্যমসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

গণমাধ্যমের প্রধান দায়িত্ব সরকারি প্রতিষ্ঠানে কোনো দুর্নীতি, অনিয়ম ও গণবিরোধী কিছু ঘটলে জনগণের সামনে তা উন্মোচন করা বলে মন্তব্য করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি একদিকে সরকার আইন করছে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তার করা যাবে না, অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তল্লাশির পরোয়ানা ছাড়াই যে কাউকে গ্রেপ্তার ও তল্লাশি করার অধিকার পুলিশের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। যে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টসে মিয়ানমারে রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে সাজা দেওয়া হয়েছে, সেই আইন আরও ভয়াবহ পরিমাণে বেশি শাস্তির বিধানসহ চালু করা হচ্ছে বাংলাদেশে। জামিন পাওয়ার মৌলিক মানবাধিকারকও ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। এই আইন আগে থেকে কার্যকর থাকলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে দুর্নীতি, ক্রেস্টের সোনার জালিয়াতি কিংবা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সচিব পদে পদোন্নতির মতো সংবাদগুলো প্রকাশ করা সম্ভব হতো না বলে গণমাধ্যমের সম্পাদকেরা জানিয়েছেন। সর্বোপরি গণমাধ্যমের সঙ্গে বৈঠকে আইনের যে সংশোধনীগুলোর প্রস্তাব করা হয়েছিল, তার কোনটিই বাস্তবায়ন করা হয়নি।

জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, তাসলিমা আখতার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, মনিরউদ্দিন পাপ্পু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীপক রায় প্রমুখ।

নেতারা বলেন, এই আইনের পূর্বসূরি ৫৭ ধারায় এখনো গ্রেপ্তার আছেন শহিদুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম, ৫৪ দিন ধরে আটক আছেন ছাত্র ফেডারেশনের নেতা মারুফ হোসেন। হয়রানির শিকার হয়েছেন আরও অনেকে। এই আইনকে গণবিরোধী আইন হিসেবে অভিহিত করে তা বাতিলের জোরালো দাবিও জানান তাঁরা।