মোনালিসা হত্যা মামলার আসামিকে আনা হলো দুবাই থেকে
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় স্কুলছাত্রী মোনালিসা আক্তারকে (১২) ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবু সাঈদকে (২৮) সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে দেশে আনা হয়েছে। দীর্ঘ আট মাস পর গ্রেপ্তার করে আজ রোববার দুপুরে তাঁকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। আবু সাঈদ ফতুল্লা পশ্চিম দেওভোগের বড় আমবাগান এলাকার ইকবাল হোসেনের ছেলে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, মোনালিসা হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবু সাঈদ দেশ ছেড়ে পালানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এনসিবি শাখার মাধ্যমে ইন্টারপোলের কাছে তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ সেপ্টেম্বর আবু সাঈদকে গ্রেপ্তার করে দুবাই পুলিশ।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের বলেন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের পর আসামি আবু সাঈদের সব প্রক্রিয়া শেষে আজ রোববার তাঁকে দেশে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড প্রার্থনা করা হবে।
মামলার এজাহার, পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আবু সাঈদ বিয়ে করার জন্য দুবাই থেকে দেশে আসেন। পরে পাশের বাড়ির ফতুল্লার কাশিপুর আমবাগান এলাকার ব্যবসায়ী শাহীন ব্যাপারীর মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির স্কুলছাত্রী মোনালিসাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সাঈদের পরিবার। কিন্তু মেয়ের বয়স অল্প হওয়ায় সাঈদের পরিবারের প্রস্তাবে রাজি হয়নি মোনালিসার পরিবার। পরে সাঈদ পাশের এলাকার এক মেয়েকে বিয়ে করেন। ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পরিবারের লোকজন নরসিংদীতে বেড়াতে গেলে মোনালিসাকে একা বাড়িতে পেয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে মোনালিসার লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পুলিশ মোনালিসার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ দিকে ঘটনার পর আবু সাঈদ দুবাই পালিয়ে যান।
ওই সময় মোনালিসার ছোট ভাই শাহেদ বলেছিল, সাঈদ নামে এলাকার এক ছেলে পানি খাওয়ার কথা বলে তাঁদের ঘরে যান। খেলার কথা বলে তাকে বাইরে পাঠিয়ে দেন সাঈদ। পরে সে ঘরে এসে দেখেন তার বোন ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে মোনালিসাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। মোনালিসা হাজী উজির আলী উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।