বখাটের ছুরিকাঘাতে স্কুলশিক্ষার্থী গুরুতর জখম

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করা হয়েছে। মো. নাঈম দফাদার নামের এক বখাটে ওই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে স্কুলের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় লোকজন বখাটে নাঈমকে আটক করে মহিপুর থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন।

এ ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীর ডাকচিৎকার শুনে শিক্ষকসহ স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

ওই শিক্ষার্থীর চাচা জানান, সে বাড়ি থেকে স্কুলে যাচ্ছিল। স্কুলের কাছাকাছি যাওয়ার পর বখাটে নাঈম তাঁর পথরোধ করে অশ্লীল মন্তব্য করে। শিক্ষার্থী এর প্রতিবাদ করে। একপর্যায়ে বখাটে নাঈম ছুরি বের করে তার পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। প্রবল বেগে রক্তক্ষরণ হয়ে সে রাস্তার ওপর পড়ে যায়। ডাকচিৎকার শোনার পর স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ওই শিক্ষার্থীর মা জানান, দুই বছর ধরে নাঈম তাঁর মেয়েকে পথেঘাটে উত্ত্যক্ত করে আসছে। এ নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা একাধিক সালিস-বিচার করেছেন। নাঈম কখনো উত্ত্যক্ত করবে না মর্মে অঙ্গীকারও করেছিল। কিন্তু কয়েক দিন ধরে সে আবার আমার মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। সর্বশেষ যা করেছে, তা-তো দেখলেন। ওই শিক্ষার্থীর মা এ ঘটনার জন্য বখাটের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।

এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ও ধুলাসার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মো. জামান হোসেন জানান, নাঈম দফাদার একজন মাদকসেবী। সে ইয়াবা, গাঁজাসহ নানা ধরনের মাদক সেবন করে। এ বছর সে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছে। এর পর থেকে তার বখাটেপনা আরও বেড়েছে।

ধুলাসার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘আমরা আহত শিক্ষার্থীকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পথে রয়েছি। ওর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে মনে হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার শুধু নিন্দা নয়, ন্যায্য বিচার চাই।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) জে এইচ খান লেলিন বলেন, ছুরির পুরো অংশই পেটের মধ্যে বিদ্ধ রয়েছে। শুধু হাতলের অংশটুকু বের হয়ে আছে। নাড়িভুঁড়ি ফুটো হয়ে গেছে। সে শঙ্কামুক্ত নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’

এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে যো্গাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জালাল উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাঈম মহিপুর থানার পুলিশের কাছে আটক রয়েছে। যথাযথভাবে পরবর্তী আইনি কার্যক্রমের জন্য আমরা অবশ্যই অপরাধীকে আদালতে পাঠাব।’