পশুখাদ্যে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
পোলট্রি ও গবাদিপশুর উৎপাদন বৃদ্ধি ও মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক ও রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব প্রাণীর দুধ, ডিম কিংবা মাংস খাওয়ার ফলে ক্ষতিকর পদার্থগুলো মানুষের শরীরেও ঢুকছে। ফলে মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। দেশে ২০১০ সালে পশুখাদ্যে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক ও হরমোন ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও তা মানা হচ্ছে না।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ রোববার তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গবেষকেরা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডিন মো. আশরাফ আলী।
গবেষণা প্রকল্পগুলো ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক ও হরমোনের বিকল্প হিসেবে ভেষজ উদ্ভিদের ব্যবহার, প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে পশুখাদ্য খড়ের পুষ্টি ও গুণগতমান বৃদ্ধি এবং দেশীয় ভেড়ার বিভিন্ন জাত থেকে টেকসই ও উৎপাদনমুখী নতুন জাত উদ্ভাবন নিয়ে। রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে আগামী তিন বছর গবেষণা চলবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই তিন প্রকল্পের প্রধান গবেষক হিসেবে পশুপুষ্টি বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ আল-মামুন ও মো. মহিউদ্দিন এবং পশু প্রজনন ও কৌলিতত্ত্ব মো. মুনির হোসেন তিনটি প্রবন্ধ ও গবেষণা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
গবেষক আল-মামুন বলেন, ‘ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসেবে প্লানটেইন নামক একটি বিরুৎ উদ্ভিদকে শনাক্ত ও প্রতিষ্ঠিত করেছি। যা অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি করে কিন্তু মানবদেহের কোনো ক্ষতি করে না। এ গবেষণা হবে ভেষজ থানকুনি, অ্যালোভেরা, দোনকলস, কুলালিয়া, নিম এবং পেঁয়াজ ও রসুনের পাতা ইত্যাদি উদ্ভিদকে অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসেবে তুলনা করা।’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আলী আকবর উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে সহউপাচার্য মো. জসিমউদ্দিন খান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর কাজী কমরউদ্দিন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ খান শহিদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে গবেষণা বিষয়বস্তুর ওপর বৈজ্ঞানিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, গবেষক, খামার ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।