ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেত্রী বহিষ্কৃত
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের এক ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহানকে বিশ্ববিদ্যালয় ও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
হলের সাধারণ ছাত্রীদের ভাষ্য, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী মোর্শেদা মোর্শেদা খানমকে নিজের কক্ষে নিয়ে মারধর করেন ইফফাত জাহান। একপর্যায়ে মোর্শেদার পা কেটে যায়। এ খবরে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
সাধারণ ছাত্রীদের অভিযোগ, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রীদের আন্দোলনের প্রথম দিন থেকেই কক্ষে নিয়ে মারধর করে আসছিলেন ইফফাত জাহান। তবে নির্যাতনের শিকার ছাত্রীরা ভয়ে কাউকে কিছু বলেননি। কিন্তু গতকাল মধ্যরাতের ঘটনার পর হলের সাধারণ ছাত্রীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সাধারণ ছাত্রীরা তাঁদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁরা হলের মূল ফটকসহ ভেতরে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। ইফফাত জাহানকে বহিষ্কারের দাবিতে স্লোগান দেন।
ছাত্রী নির্যাতনের খবর ও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। দিবাগত রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে হাজারো শিক্ষার্থী কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে জড়ো হন। কোটা সংস্কারের পক্ষের এই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
ছাত্রী নির্যাতনের বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী ঘটনাস্থলে আসেন। সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, আবাসিক শিক্ষকেরা ছাত্রীদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন। অভিযোগ ওঠা ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরও কেউ আন্দোলন করলে তাঁরা অন্য কিছু চান বলে তিনি মন্তব্য করেন। চলে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন প্রক্টর।
ইফফাত জাহানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
ঘটনার পর মধ্যরাতেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইফফাত জাহানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ইফফাত জাহানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হবে।
ইফফাত জাহানকে বহিষ্কার করার খবর জানার পর হলের সামনে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা ভোররাত চারটার দিকে ফিরে যান।
আহত মোর্শেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে তাঁর আত্মীয়ের বাসায় চলে যান। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি তিনি।