ক্যানসারের পাঁচ কারণ
বিশ্ব ক্যানসার দিবস আজ রোববার। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) অনুমিত হিসাব বলছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর নতুন করে ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে। আর বছরে মারা যাচ্ছে ৯১ হাজার মানুষ।
পাঁচটি বিষয় প্রাণঘাতী এই রোগের জন্য দায়ী। অতিরিক্ত ওজন, ফল ও সবজি কম খাওয়া, শারীরিক কাজের অভাব, তামাক এবং মদ সেবনকে সব ধরনের ক্যানসারের এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী করা হয়।
ফ্রান্স লিগ ক্যানসার অ্যাগেইনস্ট ক্যানসার (ক্যানসাররোধী সংগঠন) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ২০১৫ সালে ক্যানসারে বিশ্বব্যাপী ৮৮ লাখ রোগী মারা গেছেন। প্রতি ছয়জনে মারা গেছেন একজন। হৃদরোগের পরেই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়।
এই সংগঠনগুলোর মতে, ২০১০ সালে বিশ্বে ক্যানসার চিকিৎসার ব্যয় ছিল এক লাখ ১৬ হাজার কোটি ডলার। ঝুঁকির ধরন অনুসারে, ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ক্যানসার নিরাময়যোগ্য।
সাধারণত পাঁচ ধরনের ক্যানসার প্রাণঘাতী। ফুসফুস ক্যানসারে ১৬ লাখ ৯০ হাজার রোগীর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া স্তন ক্যানসারে ৫ লাখ ৭১ হাজার, পাকস্থলী ক্যানসারে ৭ লাখ ৫৪ হাজার, কোলন ও অন্ত্র ক্যানসারে ৭ লাখ ৭৪ হাজার এবং যকৃৎ ক্যানসারে ৭ লাখ ৮৮ হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল শনিবার বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে ক্যানসার সচেতনতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেন, ক্যানসারের আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করা জরুরি। এ বছরের ক্যানসার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আমি পারি আমরা পারি: আসুন আমরা সকলে ক্যানসারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই’।
ক্যানসার দিবসকে কেন্দ্রে রেখে গত কয়েক দিনে ঢাকায় বেশ কয়েকটি সভা-সমাবেশ হয়েছে। সরকারিভাবে কাল সোমবার জাতীয় ক্যানসার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে অনুষ্ঠান হবে। প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক মোয়াররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দেশে বর্তমানে ৯টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ও ১১টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ক্যানসারের চিকিৎসা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশের জন্য এ রকম ১৬০টি প্রতিষ্ঠান থাকা দরকার।
গতকাল ইউনাইটেড হাসপাতালের অনুষ্ঠানে মূল উপস্থাপনায় ক্যানসার বিশেষজ্ঞ অসীম সেনগুপ্ত বলেন, ক্যানসার প্রতিরোধ ও ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষের জন্য প্রত্যেকের কিছু না কিছু করার আছে। নিজে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করে ক্যানসার থেকে দূরে থাকতে পারেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যায়, প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত হলে চিকিৎসায় পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব।