কাটা পড়ছে ২৩০০ গাছ

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের শতবর্ষী এসব গাছ কেটে সড়কটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছবিটি সম্প্রতি ঝিকরগাছার শিমুলিয়া থেকে তোলা ।  প্রথম আলো
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের শতবর্ষী এসব গাছ কেটে সড়কটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছবিটি সম্প্রতি ঝিকরগাছার শিমুলিয়া থেকে তোলা । প্রথম আলো

যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ক পুনর্নির্মাণের জন্য দুই পাশের ২ হাজার ৩০০ গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদ, শেখ আফিল উদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বেলায়েত হোসেন ও আবদুল মালেক, স্থানীয় সরকার বিভাগের খুলনার পরিচালক হোসেন আলী খন্দকার, যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হোসাইন শওকত, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুজ্জামান, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

সভা শেষে সওজের যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক যথাযথ মানে প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সড়কের দুই পাশের ছোট-বড় মিলিয়ে ২ হাজার ৩০০ গাছ কেটে সড়ক সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় উপস্থিত সবাই উন্নয়নের স্বার্থে গাছ কেটে সড়ক সম্প্রসারণের পক্ষে মত দেন। ফলে গাছ কেটেই সড়ক সম্প্রসারণ করা হবে।

এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে। তারপরও মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত হচ্ছে না। ৩২৮ কোটি টাকা ব্যয়ের নতুন এ প্রকল্পের অধীনে যশোর শহরের দড়াটানা মোড় থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পে মূল সড়কের প্রশস্ততা ধরা হয়েছে ২৪ ফুট। এ ছাড়া সড়কের দুপাশে গাছ কেটে ৫ ফুট করে ১০ ফুট বাড়ানো হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক কখনোই চার লেন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ছিল না। এখনো নেই। তাহলে গাছ কাটা লাগবে কেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রকল্পের স্বার্থেই গাছ কাটা লাগবে। প্রকল্প অনুমোদনের সময় সিদ্ধান্ত ছিল, গাছ কেটেই মহাসড়কটি সম্প্রসারণ করা হবে। পরে বিভিন্ন সংগঠনের দাবির মুখে গাছ রেখেই সড়ক সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়। সওজ বিভাগ থেকে আপত্তি জানালে আবার গাছ কেটে সড়ক সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় জানানো হয়, গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি পুনর্নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে। কিন্তু বর্তমানে মহাসড়কটির দুই পাশে নতুন-পুরোনো অনেক গাছ রয়েছে। সেগুলো রেখে মহাসড়ক চার লেন করা সম্ভব নয়। সে কারণে জনস্বার্থে গাছ কাটতে হবে।

সভা সূত্রে জানা গেছে, গাছ কাটার বিষয়ে উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কেউ দ্বিমত করেননি। রাস্তা নির্মাণের পর দুই পাশে নতুন করে গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাস্তার ক্ষতি করবে না, এমন গাছ লাগানো হবে।