সিলেটেও 'পাঠাও'

যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন ‘পাঠাও’–এর এক চালক। সম্প্রতি কাজীরবাজারে l প্রথম আলো
যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন ‘পাঠাও’–এর এক চালক। সম্প্রতি কাজীরবাজারে l প্রথম আলো

কর্মক্ষেত্রে পৌঁছানোর সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা সুমিত দেবের। অথচ কোনো রিকশা বা সিএনজি অটোরিকশা পাচ্ছিলেন না। হঠাৎ কী জানি মনে পড়ে গেল। সুমিত মুঠোফোন বের একটি অ্যাপসে অনুরোধ পাঠালেন। কিছুক্ষণ পরেই মোটরসাইকেল নিয়ে হাজির হলেন চালক।

ঢাকা ও চট্টগ্রামের পর ১০ ডিসেম্বর থেকে সিলেটে যাত্রীসেবা দেওয়া শুরু করেছে ‘পাঠাও’। ‘পাঠাও’ স্মার্টফোনের একটি অ্যাপসভিত্তিক মোটরসাইকেল যাতায়াত সেবা।

পাঠাওয়ের সিলেট অঞ্চলের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) নিদাল মোহাম্মদ আলম বলেন, সিলেটে ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ‘পাঠাও’-এর কার্যক্রম। সিলেটে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০০ জন পাঠাও-এর সেবা নিচ্ছেন। যে কেউ নিবন্ধন করে চালক হিসেবে পাঠাও-এ অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। আর যাত্রীরাও রেটিংয়ের মাধ্যমে চালকদের সম্পর্কে মতামত দিতে পারবেন। যে চালকের রেটিং যত ভালো হবে, তিনি তত বেশি যাত্রী পরিবহনের সুযোগ পাবেন।

পাঠাও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অন্য শহরগুলোর মতোই সিলেটে মোটরসাইকেলে প্রাথমিক ভাড়া ধরা হয়েছে ২৫ টাকা। সর্বনিম্ন ভাড়া ধরা হয়েছে ৫০ টাকা। প্রতি কিলোমিটারে ১২ টাকা। মিনিট হিসাবে ৫০ পয়সা। ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল দিয়ে যাত্রী পরিবহন সেবা দিচ্ছে। সিলেটে এখনো প্রাইভেট কার সেবা দেওয়া শুরু হয়নি।

সম্প্রতি এক দুপুরে নগরের জেল রোড এলাকা থেকে পাঠাও অ্যাপস থেকে কাজিরবাজার ব্রিজে যাওয়ার অনুরোধ পাঠিয়ে জানা গেল, জেল রোড এলাকা থেকে কাজিরবাজার ব্রিজের দূরত্ব ও ভাড়ার পরিমাণ। মুঠোফোনে ফোন দিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর মোটরসাইকেল নিয়ে হাজির হলেন চালক সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কাজী মিজান। মিজানের মাথায় পাঠাওয়ের হেলমেট। যাত্রীর মাথায় আরেকটি।

মিজান বলেন, উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর বড় ভাই মোটরসাইকেলটি কিনে দিয়েছেন। আগে প্রতিদিন বাবা-মা ও ভাইয়ের কাছ থেকে মোটরসাইকেলের আনুষঙ্গিক খরচ চাইতে হতো। পাঠাও আসার পর তিনি চালক হিসেবে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি মোটরসাইকেল দিয়ে যাত্রী পরিবহন করে আয় করছেন।

মধ্যপ্রাচ্যফেরত আহমেদ হোসেন বলেন, কোনো কাজই ছোট নয়। দেশের বাইরে গিয়ে গাড়ি চালিয়েছেন। দেশে ফিরে ব্যবসা শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে পাঠাওয়ের চালক হিসেবে নিবন্ধন করেছেন।     

পাঠাও কর্তৃপক্ষ জানায়, চালক ও যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টি নজরদারিতে থাকে। চালকেরা একজনের বেশি যাত্রী নিতে পারবেন না। যাত্রী ও চালক দুজনের অবশ্যই হেলমেট থাকতে হবে। চালকেরা যাত্রীকে হয়রানি কিংবা তাঁর সঙ্গে আপত্তিকর ব্যবহার করলে সঙ্গে সঙ্গে পাঠাওয়ের হটলাইনে ফোন দিয়ে অভিযোগ জানানো যাবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষী চালক আজীবনের জন্য পাঠাওয়ে নিষিদ্ধ হবেন। পুরুষদের পাশাপাশি সিলেটে এরই মধ্যে কয়েকজন নারীও পাঠাওয়ের চালক হিসেবে নাম নিবন্ধন করেছেন।