ক্যাঙারু পরিবারে নতুন সদস্য
গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ক্যাঙারু পরিবারে আরও এক নতুন সদস্য যুক্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার বাচ্চাটি মায়ের থলে থেকে বেরিয়ে বিচরণ করেছে। মা ও বাচ্চা উভয়ই ভালো আছে। বাচ্চাসহ পার্কে মোট ক্যাঙারুর সংখ্যা ৩।
পার্কের বন্য প্রাণী পরিদর্শক সারোয়ার হোসেন খান জানান, ক্যাঙারু সাধারণত গর্ভধারণের ৩৩ দিন পর প্রাকৃতিক পরিবেশে বাচ্চা ভূমিষ্ঠ করে। এরপর বাচ্চাটি ছয় মাস মায়ের থলেতে থাকে। এই প্রক্রিয়া সাধারণত দেখা যায় না। ভূমিষ্ঠের সময় বাচ্চার আকার টিকটিকির মতো হয়ে থাকে, যার দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ চার ইঞ্চি। এরপর বাচ্চা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে থলের আকৃতি দেখে বুঝতে হয় বাচ্চার জন্ম হয়েছে। এভাবে বাচ্চা ছয় মাস থলেতেই থাকে।
সারোয়ার হোসেন খান জানান, গত বছরের মে মাসে মা-ক্যাঙারুটি আরেকটি বাচ্চা দিয়েছিল। ওই বছরের ডিসেম্বরে বাচ্চাটি মারা গেছে। বর্তমানে সে মেয়েবাচ্চা প্রসব করেছে।
গতকাল সরেজমিনে ক্যাঙারু শেডে গিয়ে দেখা যায়, বাচ্চাকে থলেতে নিয়ে মা-ক্যাঙারু রোদ পোহাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপর বাচ্চাটি থলে থেকে মুখ বের করে দেখছে। একপর্যায়ে বাচ্চাটি থলে থেকে বেরিয়ে মায়ের পাশে শুয়ে থাকে। থলেতে ঢুকতে বাচ্চাকে বিশেষ কায়দায় সাহায্য করছে মা।
সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রেড ক্যাঙারু জাতের দুটি নারী ও একটি পুরুষকে সাফারি পার্কে এনে রাখা হয়। পুরুষ ক্যাঙারুটি গত অক্টোবরে মারা যায়। ক্যাঙারুকে পালং শাক, পাকা কলা, কচি ঘাস, লতাপাতা ও অন্যান্য শস্য খেতে দেওয়া হয়। পুরুষ ক্যাঙারু সাধারণত ২৪ মাসে প্রজননক্ষম হয়। স্ত্রীদের প্রজননক্ষম হওয়ার বয়স ১৫ থেকে ২০ মাস। বন্য পরিবেশে এদের আয়ু হয় ১২ থেকে ১৬ বছর। ক্যাপটিভ (বদ্ধ পরিবেশে) পরিবেশে এরা ২০-২২ বছর বাঁচে। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ছাড়া দেশের আর কোথাও ক্যাঙারু নেই।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোতালেব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এখানে প্রাণীগুলোকে (ক্যাঙারু) বিশেষ পরিবেশে রেখেছি। কিছুদিন পর বাচ্চাটিকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।’